‘যৌন হেনস্তার প্রমান’ স্পষ্ট নয় ?শ্বাসরোধ করে খুন চিকিৎসককে ? ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কি ছিল তাহলে ?

rg kar medical college & hospital

প্রমান কি মিলেছে নাকি সব লোপাট হয়েছে অরজি কর-এ নতুন তথ্য

অভিযোগ উঠেছিল,নির্যাতিতার দেহে ‘১৫০ গ্রাম সিমেন’ পাওয়া গিয়েছিলো কিন্তু ময়না তদন্তের রিপোর্টে ‘সিমেন’ সংক্রান্ত কোনো উল্লেখ নেই। ‘সাদা ঘন চটচটে তরল’ সংগ্রহ করার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে সেটা কি বলা হয়নি ? আর্জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিহত চিকিৎসককের মৃত দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। তাঁর দেহে যৌন হেনস্তার প্রমাণও মিলেছে। এমনটাই রয়েছে ওই মৃত চিকিৎসকের ময়না তদন্তের রিপোর্টে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলছে,ওই চিকিৎসককে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। এমনকি,জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানো হয়েছিল তারও উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে। নিহত মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে,তাঁর শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল। মাথা,গাল,ঠোঁট,দেন চোয়াল,চিবুক,গলা,বাঁ হাত,বাঁ কাঁধ,বাঁ হাঠু,গোড়ালি এবং যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। রিপোর্টে ৰোৱলা হয়েছে,চিকিৎসকের ফুসফুসে রক্ত জমাট (হেমারেজ) বেঁধেছিলো।

শরীরের আরও কিছু অংশে রক্ত জমাট বেঁধেছিলো। চিকিৎসককে যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল তা ওই রিপোর্টে লেখা আছে। যৌনাঙ্গে জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানো হয়েছিল (রিপোর্টে লেখা আছে পেনিট্রেশন/ইনসারশন) বলেও উল্লেখ রয়েছে। একাধিক মহল থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছিল যে ১৫০ গ্রাম ‘সিমেন’ পাওয়া গেছে সেটার কথা আসলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ নেই যে সেটাই বীর্য কিনা। কলকাতা হাই কোর্টে যে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে সেখানেও ওই ‘১৫০ গ্রাম’ সিমেন কথাটির উল্লেখ রয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘সিমেন’ সংক্রান্ত কোনও উল্লেখ নেই। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, নির্যাতিতার ‘এন্ডোসার্ভিক্যাল ক্যানাল’থেকে সাদা ঘন চটচটে তরল’ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সেই তরল কি তাঁর উল্লেখ নেই রিপোর্টে।

এক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের কথায়, “যে সাদা চটচটে তরলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা বস্তু তা ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকে জানা যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমন কিছু লেখা নেই। কারণ সেটা পরীক্ষা সাপেক্ষ বিষয়”। বিভিন্ন মহল থেকে নির্যাতিতার যে হাড় ভাঙার খবর উঠে আসছিলো, ময়ান তদন্তের রিপোর্টে তেমন কিছু লেখা নেই। রিপোর্টে লেখা রয়েছে,”শ্বাসরোধ করার কারণে মৃত্যু”। মৃত্যুর ধরণ খুন। যৌনাঙ্গে জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানোর মেডিক্যাল প্রমাণও মিলেছে। এক কথায় যৌন হেনস্তার সম্ভাবনা।

নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা রয়েছে, দুই গালে একাধিক ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। কোনও ক্ষতে দৈঘ্যে ০.৩ ইঞ্চি, এবং প্রস্থে ০.১ ইঞ্চি। কোনওটি আবার দৈঘ্যে ০.২ ইঞ্চি, এবং প্রস্থে ০.১ ইঞ্চি। নিচের ঠোঁটের মাজখানে এটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে, যার দৈঘ্য ১ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ০.৪ ইঞ্চি। নাকের বাঁ দিকে একটি ক্ষত চিহ্ন রয়েছে যার দৈঘ্য ০.৩ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ০.১ ইঞ্চি। ঠোঁটের উপরেও দুটি ক্ষত চিহ্ন রয়েছে যার দৈঘ্য ০.৪ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ০.১ ইঞ্চি। ডানচোয়ালে বড়সড় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। গলার বাঁ দিকে একাধিক ক্ষত চিহ্ন, যেগুলির দৈঘ্য প্রায় ০.৫ ইঞ্চি। ডানচোয়াল এবং গলার ডানদিকে প্রায় এক ইঞ্চি দৈঘ্যের ক্ষত চিহ্ন মিলেছে। বাঁ হাতে তিনটি ক্ষত চিহ্ন মিলেছে। বাঁ কাঁধের উপর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে যার দৈঘ্য প্রায় ২ ইঞ্চি। হাইমেনের ডানদিকে রয়েছে ক্ষতচিহ্ন।

উল্লেখ্য, গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চারতলার সেমিনার হলে নির্যাতিতার দেহ মিলেছিল। অভিযোগ,ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাঁকে।

খবর সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top